বৈদেশিক মুদ্রা লঙ্ঘনের জন্য ভারত বিবিসিকে জরিমানা করেছে
হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বৈদেশিক মুদ্রা আইন লঙ্ঘনের জন্য ব্রিটিশ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক বিবিসিকে জরিমানা করেছে, একজন অজ্ঞাত সরকারি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে। ১৯৯৯ সালের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা আইন (FEMA) লঙ্ঘনের জন্য আর্থিক জরিমানা ৩১৪,৫১০ পাউন্ড ($৩৯৭,৯৮০)।
এছাড়াও, বিবিসি ইন্ডিয়ার তিন পরিচালক - গাইলস অ্যান্থনি হান্ট, ইন্দু শেখর সিনহা এবং পল মাইকেল গিবনস - প্রত্যেককে ১০৪,৮৩৬ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে।
তদন্তের পটভূমি
ইডি ২০২৩ সালের এপ্রিলে বিবিসির আর্থিক কার্যকলাপের তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে, কর্তৃপক্ষ আর্থিক অনিয়মের সন্দেহে দিল্লি এবং মুম্বাইতে সম্প্রচারকটির অফিসে অভিযান চালায়। রাশিয়ান মিডিয়া আউটলেট আরটি অভিযানের বিষয়ে রিপোর্ট করেছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগের সাথে সম্পর্কিত উদ্বেগের সাথে সম্পর্কিত।
বিবিসির প্রতিক্রিয়া
জরিমানার জবাবে, বিবিসি একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে, "আমরা যে কোনও আদেশ পাব তা সাবধানতার সাথে পর্যালোচনা করব এবং সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপগুলি বিবেচনা করব।"
প্রসঙ্গ: বিবিসির তথ্যচিত্র এবং সরকারের প্রতিক্রিয়া
ভারতে বিবিসির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সম্প্রচারক একটি বিতর্কিত তথ্যচিত্র প্রকাশের পরপরই। তথ্যচিত্রটিতে ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা পরীক্ষা করা হয়েছিল যখন তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ছবিটি ভারত সরকার সমালোচনার মুখে পড়ে, যা এটিকে "প্রচার" বলে উড়িয়ে দেয় এবং পরবর্তীতে বিবিসিকে পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদনের অভিযোগে দেশে এটি নিষিদ্ধ করে।
২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা একটি ট্রেনে আগুন দেওয়ার ফলে ৫৯ জন হিন্দু তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়। এরপর সহিংসতার ফলে ১,০০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়, যাদের বেশিরভাগই মুসলিম, এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। সেই সময়ে মোদীর প্রশাসন সহিংসতা রোধ করতে ব্যর্থ হওয়ার এবং এমনকি অস্থিরতায় জড়িত থাকার অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছিল।
প্রভাব
বিবিসির উপর আরোপিত জরিমানা ভারত সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সংস্থাগুলির মধ্যে আরেকটি বিতর্কের বিষয়। এটি দেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, বিশেষ করে ভারতে বিদেশী সংবাদমাধ্যমের কার্যক্রমের উপর ক্রমবর্ধমান নজরদারির আলোকে। পর্যবেক্ষকরা পর্যবেক্ষণ করছেন যে বিবিসি কীভাবে এই শাস্তির প্রতি সাড়া দেবে এবং আইনি মাধ্যমে জরিমানার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানাবে কিনা।
এই ঘটনা ভারত এবং বিদেশী সংবাদ সংস্থাগুলির মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে তুলে ধরে, বিশেষ করে সরকারি বিষয়গুলির সমালোচনামূলক প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপটে।