বাংলাদেশের ৫৪তম মহান বিজয় দিবস, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ২৪তম আন্তর্জাতিক লেখক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা আয়োজন করে এক ব্যতিক্রমী ও বর্ণাঢ্য আন্তর্জাতিক অনলাইন অনুষ্ঠান। ‘সৃজনের আলোয় বিজয়গাঁথা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় জুম প্ল্যাটফর্মে। বিজয় দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫৪ জন বরেণ্য ও নবীন লেখকের অংশগ্রহণ ছিল এই আয়োজনের অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ।
টরন্টো সময় সকাল ১০টায় শুরু হয়ে অনুষ্ঠানটি চলে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এই আয়োজনে বাংলাদেশ, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব এবং আফ্রিকার লেসোথোসহ বিভিন্ন দেশের লেখক, সাহিত্যিক ও অতিথিরা যুক্ত হন। ফলে অনুষ্ঠানটি পায় এক আন্তর্জাতিক ও বিশ্বজনীন রূপ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। কি-নোট স্পিকার হিসেবে থাইল্যান্ড থেকে যুক্ত হন ভয়েস অব আমেরিকার সাবেক স্বনামধন্য সম্প্রচারক রোকেয়া হায়দার। বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন কবি ইউসুফ রেজা, ড. ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, ড. শিহাব শাহরিয়ার, রবিশঙ্কর মৈত্রী, শাহজাহান চঞ্চল, আনিস আহমেদ, ড. ডিসি সাহা, সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী, নাট্যব্যক্তিত্ব আফরোজা বানু এবং সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনসহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, গান, নৃত্য ও শ্রুতিনাটক পরিবেশিত হয়। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পুথিপাঠ ও শ্রুতিনাটক দর্শকদের গভীরভাবে মুগ্ধ করে। শিশু-কিশোর পর্বে প্রবাসী নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ পুরো আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত ও আশাব্যঞ্জক করে তোলে।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বাংলাদেশ ও কানাডার জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক মানসী সাহা আয়োজনের উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। সংগঠনের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা কবি মৌ মধুবন্তী তাঁর বক্তব্যে সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন এবং অনলাইনভিত্তিক বই প্রদর্শনীর আয়োজনের কথা জানান। আয়োজকদের মতে, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা অনলাইনে বই প্রদর্শনীর মাধ্যমে এক অনন্য মাইলফলক স্থাপন করেছে।
ছয়টি পর্বে বিভক্ত এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঋতুশ্রী ঘোষ, মোয়াজ্জেম খান মনসুর, সার্বভৌম রায় মজুমদার, মম কাজী, জান্নাতুল নাইম ও তাসরীনা শিখা। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অংশগ্রহণকারী ৫৪ জন কবি ও সাহিত্যিককে ডিজিটাল অ্যাওয়ার্ড ও সার্টিফিকেট প্রদান করে সম্মাননা জানানো হয়।
দেশপ্রেম, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সম্মিলনে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান প্রবাসে বাংলা সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীরা।






