Print
এডমন্টন, আলবার্টা (কানাডা) –  বাংলাদেশ প্রেসক্লাব অব আলবার্টা ও বাংলাদেশ হেরিটেজ অ্যান্ড এথনিক সোসাইটি অব আলবার্টা এর সভাপতি দেলোয়ার জাহিদ আগামী ২১শে ফেব্রুয়ারী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০১৫ উদযাপন উপলক্ষে একটি বিবৃতি প্রদান করেছেন।
একুশে ফেব্রুয়ারী তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্য্যপূর্ণ, ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এদিনটিকে স্বীকৃতি প্রদান আমাদের জাতিসত্বার শিকরকেই স্মরণ করিয়ে দেয়, যা লব্ধ শ্রব্ধা ও জাতির একতার মূল। এখন এ দিবসটি সারা পৃথিবীর জন্য একটি বিশেষ দিন যা বিশ্বব্যাপি ২০০০ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে। ইউনেস্কোর এ স্বীকৃতি সকল জাতির জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ বিশেষতঃ বাঙ্গালীদের জন্য। বাংলাদেশে ভাষার দাবিতে  আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর ঢাকায় ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছিলো। সে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার ইতিহাস যেন এক সূত্রে গাথা।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস একটি বিশেষ ও মূর্ত দিন যার আবেদন সারা বিশ্বের মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার প্রতীক হিসেবে এখন ছড়িয়ে পড়েছে ।
বাংলাদেশের জন্য, ২১শে ফেব্রুয়ারি উদযাপন (ভাষা শহীদ দিবস) মানে সকল বাঙালিদের শোক যা কাঁদতে শেখায়, এর গান, কবিতা, নাটক সাদা ও কালো রং এর পোশাক পরে প্রভাতফেরী সবকিছুর মধ্যেই বেদনার আমেজ। সেদিন সরকারি ছুটি দিন এবং জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা হয়. মানুষ, শৈল্পিক দক্ষতার সঙ্গে বিশেষ করে তরুণ, নারী-পুরুষ, রাস্তায় "আলপনা" একে বর্নিল করে তুলে পথঘাট।  শোকার্ত সব মানুষ সাদা-কাল পরে হাতে ফুলের গুচ্ছ নিয়ে শহীদদের কবরের দিকে খালি পায়ে  হেটে যায়,  কন্ঠে তাদের "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো ২১শে ফেব্রুয়ারী", এ গান এর সুর ফেব্রুয়ারি মাসে সারা বাংলাদেশের প্রতিটি পথে প্রান্তরে বাজানো হয়, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয় এ দিনের প্রতিনিধিত্ব করে. স্কুল, কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ঐতিহাসিক আন্দোলনের সব শহীদদের সম্মান দিতে নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।
মাতৃভাষা দিবসের উদ্যাপন দেশে এবং বিদেশে শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির  পথে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ যা বাংলাদেশর জন্য মহিমা এবং সম্মান বয়ে এনেছে.
আমরা যারা প্রবাসী বাংলাদেশী, যারা জন্ম বা ইমিগ্রশন সূত্রে বাংলাদেশী-কানাডিয়ান বা বাংলাদেশী আমেরিকান তারা একটি দ্রুত বর্ধনশীল সম্প্রদায় হিসেবে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আমাদের বৈচিত্র্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরার দায়িত্ব রয়েছে, এবং এটি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে, অন্য সম্প্রদায়ের সাথে ও সূর মেলাতে হবে। এর জন্য আমাদের ব্যাপক প্রচারণা ও মিডিয়ার সহায়তা দরকার।
কানাডা সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সরকারী ছুটি ও তা প্রতিটি প্রদেশে যথাযথ পালনের জন্য এখনই ঘোষনা দেয়া হোক; আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে স্বীকৃতি দিতে বেসরকারি সদস্যের বিল সি-৫৭৩ তে  রাজ সম্মতির আশু ব্যবস্থা নেয়া হোক।
আরো কাজ এর মধ্যে শুধু অভিবাসী নয় বরং কানাডার প্রথম  জাতির মানুষের জন্যেও কাজ করা প্রয়োজন. মাতৃভাষা শিক্ষা ও ভাষাগত সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণের জন্য সমস্ত বিশ্বের অনেক দেশেই এটি একটি সমস্যা যার প্রতিকার প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এর গুরুত্বকে তুলে ধরতে বিদেশে আমাদের দূতাবাস গুলোর মাধ্যমে দৃশ্যমান কিছু কুটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহন করা, এবং আশু একটি পর্যবেক্ষন সেল গঠন করা হোক। সকল মহলের কাছে একান্ত নিবেদন দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রবাসে এবার থেকে একুশে উদযাপন করা হোক।

আরো তথ্য জানতে দয়া করে যোগাযোগ করুনঃ বিপিসিএ ফোনঃ (৭৮০) ২০০-৩৫৯২